বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভূয়া লন্ডনী কন্যার বিয়ের ফাঁদে পড়ে এক যুবক সর্বস্ব হারিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। ভূয়া লন্ডনী কন্যার নাম পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগম। তিনি দিরাই উপজেলার গছিয়া গ্রামের আবদুস সোবহানের মেয়ে। যুবকের নাম একতার হোসেন লিটন। তিনি জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের সাংগিয়ারগাঁও গ্রামের মৃত রইছ আলীর ছেলে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, দিরাই উপজেলার গছিয়া গ্রামের ফারুক মিয়া তার স্ত্রী পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগমকে ভিজিট ভিসায় লন্ডন নেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর ২০০৮ সালে পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগম দেশে ফিরে এসে নিজেকে লন্ডনী ব্রিটিশ সিটিজেন বলে এলাকায় পরিচয় দেন। এ সময় লন্ডন যাওয়ার লোভে লন্ডনী কন্যার প্রেমের জালে ধরা পড়েন জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের সাংগিয়ারগাঁও গ্রামের কলেজ ছাত্র একতার হোসেন লিটন। দীর্ঘদিনের প্রেমের পরিণয় ঘটে তাদের কোর্ট ম্যারিজে বিয়ের মাধ্যমে। লন্ডনী কন্যা তার আগের স্বামী ফারুক মিয়াকে তালাক দিয়ে নতুন প্রেমিক লিটনকে নিয়ে সংসার বাধেঁন। এ সময় লন্ডনী কন্যাকে নগদ ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে বিয়ে করেন বলে কলেজ ছাত্র লিটন জানান। তবে বিয়ের কিছুদিন পর লন্ডনী কন্যার আসল রহস্য ফাঁস হয়ে যায়। তিনি ভিজিটে লন্ডন গেলেও ব্রিটিশ সিটিজেন নন। এ ঘটনা জানাজানি হলে তাদের পরিবারে অশান্তি হলেও সহজ-সরল কলেজ ছাত্র লিটন তার ভাগ্যকে মেনে নেন এবং দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর ঘর-সংসার করেন। এর মধ্যে আরো বিভিন্ন অজুহাতে লিটনের কাছ থেকে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন তার স্ত্রী লিপি বেগম বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এক পর্যায়ে টাকা দেয়া-নেয়া নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং পূর্বে নেয়া ৫ লক্ষ টাকা সহ মোট ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকার উত্তরা ব্যাংক জগন্নাথপুর শাখার একটি চেক লিপি বেগম তার স্বামী লিটনকে দেন। এরপরও সুন্দরভাবে চলছিল তাদের দাম্পত্য জীবন।
তবে বাদ সাধে পরকীয়া। উচ্চাবিলাসী লিপি বেগম তার বর্তমান স্বামীকে রেখে অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। এক পর্যায়ে লিপি বেগমকে তালাক দেন লিটন। পরে লিপি বেগমের দেয়া চেক দিয়ে ব্যাংকে টাকা তুলতে গিয়ে একাউন্টে টাকা না থাকায় চেক ডিজঅনার মামলা করেন লিটন। এ মামলা দায়েরের পর চলতি ২০১৯ সালের ২৫ আগষ্ট বিষয়টি আপোষে নিস্পত্তির কথা বলে লিপি বেগম লিটনকে দিরাই ডেকে নিয়ে অন্য লোকজন দিয়ে মারধর করেন । এ সময় দৌড়ে পালিয়ে যেতে চাইলে তাকে ধরে গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ সুনামগঞ্জের গণিগঞ্জ নামক স্থানে। তখন অজ্ঞান অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে টেনে হেঁচড়ে নেয়ার পথে স্থানীয় জনসাধারণ তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় একতার হোসেন লিটন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগম সহ ৬ জনকে আসামী করে গত সোমবার মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১০৯/২০১৯ইং।
বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে একতার হোসেন লিটনের সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, ভূয়া ও চরিত্রহীন লন্ডনী কন্যার প্রেমের ফাঁদে পড়ে আমি সর্বস্ব হারিয়েছি। বর্তমানে মামলা দায়েরের পর সে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে এবং আমাকে প্রাণ নাশের জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এদিকে-এ ব্যাপারে জানতে বারবার চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় অভিযুক্ত পারভীন আলী ওরফে লিপি বেগমের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply